বাংলা হেডলাইনস বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে উম্মে কুলসুম ও উম্মে ফাতেমা যমজ বোন।
করোনাকালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও পরিবারের আর্থিক অবস্থা মন্দা হওয়ায় বাবা-মা তাদের বিয়ে দেন। দু’জনের কোলজুড়ে ছেলে ও মেয়ে সন্তান আসে। এবার দু’বোন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার তারা দু’মাস বয়সী শিশু সন্তান কোলে নিয়ে সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসে। বাচ্চাদের মা ও খালার কোলে রেখে তারা পরীক্ষা হলে প্রবেশ করে। এর আগে দুই বোন বাচ্চাদের পেটভরে দুধ পান করান। তাদের দেখতে স্থানীয়রা স্কুল চত্বরে ভিড় করে।
স্থানীয়রা জানান, উম্মে কুলসুম ও উম্মে ফাতেমা সারিয়াকান্দি উপজেলার বড়ইকান্দি বিমানবন্দর পাড়ার ক্ষুদে ব্যবসায়ী রঞ্জু মিয়ার জমজ মেয়ে। তারা স্থানীয় নিজাম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। গত করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই বোন বাড়িতে ছিলেন। ব্যবসা মন্দা যাওয়ায় রঞ্জু মিয়ার আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় মেয়েদের বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। বাধ্য হয়ে বাবা-মা উম্মে কুলসুমকে সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিতপরল গ্রামে এবং উম্মে ফাতেমাকে পাশের গাবতলী উপজেলার দাঁড়াইল গ্রামে বিয়ে দেন। বিয়ের বছরখানেক পরে ১০ দিনের ব্যবধানে দুই বোনের কোলজুড়ে সন্তান আসে। উম্মে কুলসুম ছেলের ও উম্মে ফাতেমা মেয়ের মা হন।
শ্বশুর বাড়ির ইচ্ছায় দুই বোন নিজাম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেন। তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র হয়, সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। বৃহস্পতিবার প্রথমদিন দু’বোন কোলে বাচ্চা নিয়ে কেন্দ্রে আসে। তাদের দেখে উৎসুখ জনতা ভিড় করে। বাচ্চাদের দুধ পান করানোর পর দুই বোন তাদের মা ও খালার কোলে বাচ্চাদের রেখে পরীক্ষায় অংশ নেন।
পরীক্ষা শেষে বাচ্চাদের দুধ পান করিয়ে কান্না থামানোর পর উম্মে কুলসুম ও উম্মে ফাতেমা জানান, তারা দু’জন নিজাম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়তেন। করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় ও বাবার ব্যবসা মন্দা হওয়ায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শ্বশুর বাড়ির সকলের ইচ্ছায় তারা এবার এসএসসি পরীক্ষা অংশ নেন। তারা জানান পরীক্ষা ভালো হয়েছে।