বাংলা হেডলাইনস সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা সোমবার বিকেলে সেই মানসিক রোগী আব্দুল মোতালেবের পেট থেকে আরো ৮ টি কলম বের করেছেন।
এ নিয়ে দু’দফায় অস্ত্রোপচার ছাড়াই এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে মোট ২৩টি কলম বের করা হলো মানসিক ওই রোগীর পেট থেকে।
মোতালেব বেলকুচি উপজেলার খুকনি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। ওই হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ডা. কৃষ্ণ কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রায় ৪/৫ বছর ধরে মানসিক রোগে আক্রান্ত মোতালেব সম্ভবত পথে পথে ঘুরে বেড়ানোর সময় কলম কুড়িয়ে তা গিলে ফেলে। এক পর্যায়ে ওই মানসিক রোগী অসুস্থ হয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার পেটে অনেকগুলো কলম দেখতে পেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিকেলে সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম ও কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খান কোনোপ্রকার অস্ত্রোপচার ছাড়াই ৩ ঘণ্টা এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে মানসিক রোগী মোতালেবের পেট থেকে এক এক করে ১৫টি কলম বের করে আনেন। এরপর তার পেটে আরও ৮টি কলম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আজ সোমবার (২৯ মে) দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে আরও ৮টি কলম বের করেন চিকিৎসকরা। তার পেটে এখন আর কোন কলম নেই এবং বর্তমানে সে সুস্থ আছে।
তবে মেডিকেল সাইন্সের ইতিহাসে মানুষের পেট থেকে এতগুলো কলম বের করার ঘটনা প্রথম দাবী করেন তিনি। কোনোপ্রকার অস্ত্রোপচার ছাড়া এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে পেট থেকে কলম বের করা বাংলাদেশে প্রথম ঘটনা বলে দাবী করেছেন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস মোহাম্মদ খায়রুল আতাতুর্ক।
তিনি বলেন, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নতমানের অত্যাধুনিক সব ধরনের মেশিনসহ ৮ টি এন্ডোস্কোপি মেশিন রয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক বিভাগে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও রয়েছে। এসব যন্ত্রপাতির অনেকগুলো চালু রয়েছে আবার যেগুলো বাকি আছে সেগুলোও অল্প দিনের মধ্যেই চালু করা হবে। এখন অত্যাধুনিক এন্ডোস্কোপি মেশিনের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার না করেই পিত্তথলি ও কিডনির পাথর ঢাকাসহ দেশের হাসপাতালগুলোতেই অহরহ বের করা হচ্ছে। এ সব রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের মানুষকে এখন আর বিদেশে যেতে হবেনা বা হয় না বলে উল্লেখ করে চিকিৎসা সেবায় সিরাজগঞ্জসহ এ অঞ্চলের মানুষের আস্থার কেন্দ্র হবে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল বলেও আশা প্রকাশ করেন পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস ।