বাংলা হেডলাইনস বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সাথে পদবঞ্চিতদের বিরোধ দিন দিন তুঙ্গে উঠছে।
গত ৪৩ দিন আগে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণার পর দলীয় কার্যালয়ে ৪-৫ বার তালা লাগানো ও ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ সোমবার সন্ধ্যায় একপক্ষের বিরুদ্ধে দরজা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ ও অপরপক্ষের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ নেতাকর্মীরা এ সংকট নিরসনে কেন্দ্রের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এসব ঘটনার জন্য একপক্ষ অপর পক্ষকে দায়ি করেছে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ গত ৭ নভেম্বর বগুড়া জেলা শাখার ৩০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা দেয়। সজীব সাহাকে সভাপতি ও আল মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ করা সম্পাদক করা হয়। এরপর থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পরিবর্তনের জন্য পদবঞ্চিতরা আন্দোলন করে আসছেন। তারা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে একবার ও ছাত্রলীগ কার্যালয়ে অন্তত ৫বার তালা দেয়। তালা ভেঙে জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দও কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কুশপুত্তলিকা দাহ ও তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
গত ১৬ ডিসেম্বর কর্মসূচি পালন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এর আগে দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টা পাল্টি মামলাও হয়েছে। ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটির সাথে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুসহ দায়িত্বশীল অনেক নেতা রয়েছে। আবার পদবঞ্চিতদের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন ও কয়েকজন আছেন। ছাত্রলীগের আন্দোলন নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছাও জানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা চলছে।
সর্বশেষ সোমবার সন্ধ্যার দিকে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় ও বেশ কয়েকজন তাদের অনুসারীরা শহরের টেম্পল রোডে দলীয় কার্যালয়ে আসেন। কিন্তু দরজায় পদবঞ্চিতদের লাগানো তালা থাকায় তারা ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে তারা দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন। সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে নেতাকর্মীরা দরজা অফিসের বাহিরে রেখে চলে যান। রাত ৮টার দিকে ক্ষুব্ধ পদবঞ্চিতরা দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এতে বসার বেঞ্চ, টেবিল ও অন্যান্য আসবাবপত্র পুড়ে যায়।
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় বলেন, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন। তখন কার্যালয়ের দরজা ছিল। তারা চলে আসার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদবঞ্চিত যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজার রহমান ও শহর শাখার সাবেক সভাপতি সুজিত কুমারের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন পার্টি অফিসে ঢুকে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
দরজা খুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ দৃঢতার সাথে অস্বীকার করে জয় আরো বলেন, যারা দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তারা কখনই ছাত্রলীগের নেতা হতে পারেনা। আর ওই ভাংচুরকারীরাই দরজা ভেঙে নিয়ে গেছেন।
পদবঞ্চিত ও আন্দোলনে অন্যতম নেতৃত্বদানকারী যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজার রহমান সাংবাদিকদের জানান, তারা প্রতিদিনের মত মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, দলীয় কার্যালয়ের দরজা ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, যারা দরজা ভেঙে নিয়ে গেছে তারাই দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। তিনি আরো বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।