সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩০ অপরাহ্ন

চাঁদা না দেয়ায় বাঁধার মুখে মাছ আহরণ বন্ধ করে দিয়েছে জেলেরা

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৯ দেখা হয়েছে

বাংলা হেডলাইনস রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি: চার মাস সাতদিন মাছ আহরণ বন্ধ থাকার পর শনিবার মধ্যরাত হতে দেশের সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞা শেষে কাপ্তাইয়ের জেলেদের মাছ ধরার কথা থাকলেও পাহাড়ের একটি আঞ্চলিক দলের সদস্যদের চাঁদা প্রদান না করায় কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের মাছ আহরণের নিষেধাজ্ঞা জারী করে।

ফলে জেলেরা মাছ আহরণ করতে না পারায় কাপ্তাই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে জেলেরা কোন মাছ অবতরণ করতে পারে নাই।

রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় কাপ্তাই মৎস্যজীবী সমিতির কয়েকজন নেতৃবৃন্দ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পাহাড়ের আঞ্চলিক দল জেএসএস (সন্তু) সমর্থিত কিছু সদস্য কাপ্তাই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নিকট হতে অতিরিক্ত বাৎসরিক চাঁদা দাবি করে। যা অন্যান্য বছরে তুলনায় অনেক বেশি। তাদের কথামতো চাঁদা না দেয়ায় জেলেদের মাছ ধরতে নিষেধ করে দেন তারা। এর ফলে জেলেরা ভয়ে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা থেকে বিরত রয়েছে।

কাপ্তাই মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের উপ কেন্দ্র প্রধান জসিম উদ্দিন জানান, রবিবার সকাল পর্যন্ত কাপ্তাই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কাপ্তাইয়ের জেলেরা কোন মাছ অবতরণ করেন নাই। এতে করে মাছ অবতরণ ঘাটে কোন কর্মব্যস্ততা নেই কারোর। কি কারণে জেলেরা মাছ ধরা হতে বিরত আছে তা জানি না।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আমাদের জেলেরা কাপ্তাই হ্রদে বিভিন্ন স্থানে মাছ আহরণ সম্পন্ন করতে করতে পারেনি। জেলেদের মাঝে নানা ধরনের আশঙ্কা থাকায় তারা মাছ আহরণ করতে পারেনি। যার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রথম দিনে মাছের অবতরণ কম আছে।

তবে আমরা জেলে ও ব্যবসায়ীদের আশ^স্ত করেছি যে আপনার  নিঃসংকোচে কাপ্তাই মাছ আহরণ করতে পারেন। এখনে কোনসমস্যা বা বিষয় থাকলে আমরা প্রশাসন মিলে সমাধান করবো বলে আশ্বাস দিয়েছি। হয়তো দুই একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ২৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ হতে মৎস্য আহরণ ও বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ৩১ আগষ্ট কাপ্তাই হ্রদে মধ্যরাত হতে মাছ আহরণ এবং ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা হতে কাপ্তাই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। জেলেরা মাছ আহরণ করতে না পারায় কাপ্তাই মৎস্য অবতরণ কেন্দে কোন কার্যক্রম নেই।

এশিয়ার বৃহত্তম এই কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদে ৬৬টি দেশি ও প্রজাতির ও ৬টি বহিরাগত প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। আর হ্রদের মিঠা পানির মাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই রাঙ্গামাটি এই কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রকৃতিক প্রজনন ধরে রাখতে কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য সম্পদ রক্ষাসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে দ্রুত কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে জল বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষে রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে সৃষ্টি করা হয় ২৫৬ বর্গমাইল আয়তনের কৃত্রিম এই কাপ্তাই হ্রদ। পরবর্তীতে এই হ্রদ হয়ে উঠে মিঠাপানির মাছের সবচেয়ে বড় ভান্ডার। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই কৃত্রিম হ্রদে দেশীয় রুই প্রজাতির মাছের বড় একটি অংশ দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগান দেয়া হয় এখান থেকে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আমাদের মতামত জানাতে পারেন।

খবরটি শেয়ার করুন..

এই বিভাগের আরো সংবাদ
Banglaheadlines.com is one of the leading Bangla news portals, Get the latest news, breaking news, daily news, online news in Bangladesh & worldwide.
Designed & Developed By Banglaheadlines.com